আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিখ ইতিহাসের একটি আকর্ষণীয় অংশ আবারও অনলাইনে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে সকলের। একজন পাকিস্তানি ভ্রমণ ভ্লগারকে এর জন্য ধন্যবাদ। তাঁর সাম্প্রতিক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে, ভ্লগার পাকিস্তানের মাঙ্গাতে (মান্ডি বাহাউদ্দিন) গুরুদ্বার ভাই বান্নুর একটি ঝলক শেয়ার করেছেন। শতাব্দী প্রাচীন এই স্থানটি শিখ ঐতিহ্যে একটি বিশেষ স্থান, কিন্তু আজ এটি বিস্মৃত হয়ে আছে, পুনরুদ্ধারের অপেক্ষায়।
ভিডিওটি শেয়ার করে ভ্লগার তার ক্যাপশনে লিখেছেন, “মাঙ্গাত (মান্ডি বাহাউদ্দিন) গ্রামে গুরুদ্বার ভাই বান্নু অবস্থিত। মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের রাজত্বকালে ১৯ শতকে নির্মিত, এটি মুঘল ও শিখ শিল্পের এক অত্যাশ্চর্য মিশ্রণ। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত গুরু গ্রন্থ সাহেবের পবিত্র ‘ভাই বান্নু খণ্ড’ কানপুরে নিয়ে যাওয়ার আগে এখানেই ছিল। আজ, পাকিস্তানের এই ভুলে যাওয়া গুরুদ্বারটি একটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে টিকে আছে, পুনরুদ্ধারের অপেক্ষায়।”
আরও পড়ুন: লাদাখে বিক্ষোভকারীদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ, গ্রেপ্তার সোনম ওয়াংচুক
ভাই বান্নুর পবিত্র ইতিহাস
গুরুদ্বার ভাই বান্নুর গুরুত্ব ১৭ শতক থেকে শুরু। গুরু অর্জান দেব জির ভক্ত এবং মাঙ্গাতের বাসিন্দা ভাই বান্নুকে একটি পবিত্র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। যখন গুরু অর্জান দেব জির গুরু গ্রন্থ সাহেবের প্রথম সংস্করণ সংকলন করেছিলেন, তখন ভাই বান্নুকে এটি বাঁধতে বলা হয়েছিল।
লাহোরে নিয়ে যাওয়ার আগে ভাই বান্নু ধর্মগ্রন্থটি মাঙ্গাতে রেখেছিলেন। সেখানে তিনি একটি হাতে লেখা কপি তৈরি করেছিলেন যা ‘ভাই বান্নু খণ্ড’ নামে পরিচিতি পায়। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এটি গুরুদ্বারে সংরক্ষিত ছিল। দেশভাগের সময় শিখ সম্প্রদায় এটি কানপুরে নিয়ে যায়। শহরে, ভাই বান্নুর নামে আরও একটি গুরুদ্বার নির্মিত হয়েছিল।
মুঘল ও শিখ স্থাপত্যের মিশ্রণ
মাঙ্গাতের বর্তমান স্থাপনাটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের রাজত্বকালে নির্মিত হয়েছিল। এটি মুঘল ও শিখ শিল্পের মিশ্রণ রয়েছে। গুরুদ্বারটি একটি তিনতলা ভবন যা সুন্দর ফ্রেস্কো কাজ দিয়ে সজ্জিত। যা সেই সময়ের শ্রমিকদের শৈল্পিক উৎকর্ষতার প্রমাণ।
দুঃখের বিষয় হল, দেশভাগের পর স্থানটি আর গুরুদ্বার হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি। কয়েক দশক ধরে, এটি ২০০৫ সাল পর্যন্ত একটি স্কুল হিসেবে কাজ করত। আজ, এটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে টিকে আছে এবং এর সংস্কারের জরুরি প্রয়োজন।
