রাজ্যের তিন নির্বাচনে উপনির্বাচন। খড়্গপুর, করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল বিরোধী শিবির প্রথমেই শুরু করেছে হিসেবনিকেশ। বামফ্রন্ট নিজেদের মধ্যে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হবে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা। তিন আসনে ভাগাভাগি করে প্রার্থী। কংগ্রেস রাজি। দিল্লি থেকে গ্রিন সিগনাল নিয়ে এসেছে। ঠিক হয়ে গিয়েছে খড়্গপুরে আর কালিয়াগঞ্জে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস, করিমপুর পাচ্ছে সিপিএম। এই সমঝোতা নতুন কিছু নয়। বাম এবং কংগ্রেস রাজ্যের ভোটে বারবার এই সমঝোতায় গিয়েছে। কখনও প্রকাশ্যে, কখনও গোপনে। সিপিএম কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরতে এতটাই মরিয়া যে একসময় নিজের পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি করেছিল। কোনও দল মনে করতেই পারে, প্রধান শক্রকে পরাস্ত করতে নীতি আদর্শের ঘোর বিরোধীদেরে সঙ্গেও হাত মেলানো যায়। কিন্তু অতীত কী বলছে? এই ধরনের প্রকাশ্য এবং গোপন জোটে বাম ভোটে ধস নেমেছে বারবার। কেন এমন হল? কারণ নানা হতে পারে। হয়তো এই ধরনের ‘নীতিহীন’ জোটের ফলে বামদের প্রতি বিশ্বাস, ভরসা আরও হারিয়েছে মানু্ষ। হতে পারে ডুবন্ত তরীকে বাঁচাতে কংগ্রেসের হাত ধরতে চাইছে বামেরা। যদি বেঁচেও যায় কোনও আসনে, সেটা কি বঁাচা হবে? বামপন্থার? কংগ্রেসের ক্ষতি নেই, বরং সবটাই লাভ। সবথেকে বড় লাভ, তারা পাকাপাকিভাবে বামপন্থাকে গুলিয়ে দিতে পারছে। আর্দশ ভুলিয়ে সিপিএমকে–ও একটা জোটমুখী, ভোটমুখী দলে পরিণত করছে। এই উপনির্বাচনেও একথা আবার প্রমাণিত হল। এর মধ্যে আবার কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান খড়্গপুরে তৃণমূলকে সমর্থন করতে চেয়েছেন। এবার কী হবে? কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমরা দেখেছি বিভিন্ন ইস্যুতে সিপিএম নেতারা আবদুল মান্নানের সঙ্গে ‘হাতে হাত’, ‘কাঁধে কাঁধ’ মিলিয়ে সোচ্চার। সেই নেতারা এবার মানু্ষের কাছে কী কৈফিয়ত দেবেন? চিনতে ভুল হয়েছিল? নাকি ‘যখন যেমন প্রয়োজন হয়েছে, তখন তেমন হাত ধরেছি’? সত্যিকারের বামপন্থীরা কি আর এই বাম নেতাদের হাত অকারণে ছাড়ছে? না, অকারণ নয়। হাতের ওপর হাত রাখা খুব সহজ নয়।