‘বেচেন্দ্র’— প্রধানমন্ত্রীকে ভারী জুতসই একটা নাম দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। বিইএমএল, কন্টেনার কর্পোরেশন, শিপিং কর্পোরেশন, বিপিসিএল— বেচে দেওয়ার তালিকাটা একটু বেশিই দীর্ঘ। কর্পোরেটদের ১ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি ছাড় দিয়েছিলেন মোদি, এবার বিপিসিএল বিক্রি করে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি তোলার চেষ্টা। সেই কোম্পানি যাকে আমরা বার্মা শেল বলে জানতাম ১৯২০ সাল থেকে। রয়্যাল ডাচ শেল, এশিয়াটিক শেল, ক্যালটেক্স–এসো— তাবড় কোম্পানির শেয়ার ছিল। পরে হল এইচপিসিএল। ক্যালটেক্স–এসো তাদের ৫১ শতাংশ অংশীদারি ওএনজিসি–কে বিক্রি করে দেয়। ২০০৩ সালেই অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার এইচপিসিএল বেচতে গিয়েছিল, মামলা সুপ্রিম কোর্টে যায়। বিচারপতি বাবু ও মাথুরের বেঞ্চ সরকারকে সংসদের অনুমতি নিতে বলেছিল। কারণ ১৯৭৬ সালের বিপিসিএল আইনে তেমনই শর্ত ছিল। তখন ভারতের এই ‘রত্ন’ গিলে খেতে লাইন দিয়েছিল রিল্যায়েন্স, পেট্রোনাজ, শেল, এসার অয়েলের মতো কোম্পানি। দেশবাসী ভারত–পাকিস্তান, হিন্দু–মুসলিম নিয়ে মেতে থাকার ফঁাকেই মোদি সরকার ওই রকম ১৮৭টি আইন বাতিল করে দিয়েছে। ‘অবজেক্টস অ্যান্ড রিজনস রিপিলিং’— এমন একটা নামের মোড়কে সাঙ্ঘাতিক কাণ্ড ঘটে গেছে। জানতে চান এইচপিসিএল কেমন কোম্পানি? যারা সরকারকে ১৯ হাজার কোটি কর দিয়েছে, ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৯০০০ কোটির— তারা ফি–বছর ‘সোনার ডিম’ পাড়ে। চারটি রিফাইনারি, ৬৫,৫৫৪টি পেট্রোল পাম্প আছে ওই কোম্পানির। ২০১৬ সালে এসার অয়েল পুরোপুরি রাশিয়ার রোজনেক–ট্রফিওরার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মোদি–পুটিনের বৈঠকেই রুইয়াদের শেয়ার বেচা চূড়ান্ত হয়, ৪০ হাজার কোটি পায় রুইয়ারা। বিনিময়ে বিদেশি কোম্পানির হাতে ২ কোটি টন ক্ষমতার শোধনাগার, ৩৫০০ পেট্রোল পাম্প চলে গেছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশের সুরক্ষাও জড়িত থাকে, তাতে বেচেন্দ্রবাবুদের বয়েই গেছে। তিনি চান ‘এক দেশ, এক কোম্পানি’।