আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতকে ‘মৃত অর্থনীতি’ বলে দাগিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তাঁর পারিবারিক ব্যবসা ‘দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’ আমেরিকার বাইরে ভারতেই সবচেয়ে বড় রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন গত ১০ বছরে। 

গত বছর পর্যন্ত ট্রাম্পের সংস্থা শীর্ষস্থানীয় নির্মাতাদের সঙ্গে একাধিক চুক্তি করেছে। উপলব্ধ রেকর্ড অনুযায়ী, মুম্বই, পুণে, কলকাতা এবং গুরুগ্রামের সাতটি প্রকল্প থেকে কমপক্ষে ১৭৫ কোটি টাকা আয় করেছে। ২০১২ সালে ঘোষিত প্রথম প্রকল্পের মাধ্যমে ব্র্যান্ড ট্রাম্প ভারতে পা রাখে। এই প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ হওয়ার সময়, প্রায় চারগুণ সম্প্রসারিত হয়ে ১ কোটি ১০ লক্ষ বর্গফুটে পৌঁছবে। যা গত বছর পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ বর্গফুট ছিল।

আরও পড়ুন: কেন উত্তরকাশীতেই বার বার বিপর্যয়, অপরিকল্পিত উন্নয়ন না ভূগোল, দায়ী কে

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত আট মাস ধরে, ব্র্যান্ড ট্রাম্প ভারতে আক্রমণাত্মক সম্প্রসারণ অভিযান চালাচ্ছে। ৫ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন, তার ভারতীয় অংশীদার ট্রাইবেকা ডেভেলপারদের সঙ্গে গুরুগ্রাম, পুণে, হায়দ্রাবাদ, মুম্বই, নয়ডা এবং বেঙ্গালুরুতে কমপক্ষে ছয়টি প্রকল্প ঘোষণা করে। যার ফলে ৮০ লক্ষ বর্গফুট আবাসন প্রকল্পের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এর মধ্যে, প্রায় ৪.৩ মিলিয়ন বর্গফুট আয়তনের তিনটি প্রকল্প ইতিমধ্যেই এই বছর পুণে, গুরুগ্রাম এবং হায়দ্রাবাদে চালু করা হয়েছে। যা ব্র্যান্ড ট্রাম্পের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও বেশি।

এই বছরের মার্চ মাসে ঘোষিত পুণে শহরের প্রকল্পটি প্রথম ট্রাম্প-ব্র্যান্ডেড বাণিজ্যিক প্রকল্প। উদ্বোধনের সময় এক বিবৃতিতে, ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক ট্রাম্প বলেন, “ভারত অসাধারণ উৎসাহের সঙ্গে ট্রাম্প ব্র্যান্ডকে গ্রহণ করেছে।”

ট্রাম্প অর্গানাইজেশন একটি বেসরকারিভাবে পরিচালিত আমেরিকান সংস্থা যার সদর দপ্তর নিউ ইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে অবস্থিত। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য প্রধান হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে কাজ করে। ১৯২৭ সালে ট্রাম্পের ঠাকুমা এবং বাবা এলিজাবেথ ট্রাম্প অ্যান্ড সন নামে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সংস্থাটি। ১৯৭১ সালে ট্রাম্প সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এটির নামকরণ করা হয় ট্রাম্প অর্গানাইজেশন।

আরও পড়ুন: পেটে হাল্কা মেদ এবং এশীয়... অনলিফ্যানসে কী রকম ভিডিও খোঁজেন ভারতীয়রা?

ট্রাম্প অর্গানাইজেশন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে, যার মধ্যে রিয়েল এস্টেট, হোটেল, গল্ফ রিসোর্ট এবং ব্র্যান্ড লাইসেন্সিংয়ের উপর জোর দেওয়া হয়। এটি আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশে বিলাসবহুল আবাসিক টাওয়ার, হোটেল এবং বাণিজ্যিক সম্পত্তির মালিক এবং পরিচালনা করে থাকে। ট্রাম্প অর্গানাইজেশন একাধিক তদন্ত এবং আইনি সমস্যার সম্মুখীনও হয়েছে। বিশেষ করে কর ফাঁকি, সম্পদ মূল্যায়ন এবং ব্যবসায়িক নীতি নিয়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিয়েলিটি টিভি ক্যারিয়ারের মাধ্যমে, বিশেষ করে দ্য অ্যাপ্রেন্টিসের মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে মার্কিন রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে সংস্থাটির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বিশ্বজুড়ে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ব্যক্তিগত সংস্থা হওয়ায় তাকে আর্থিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে হয় না। এর বেশিরভাগ কার্যক্রম এবং আর্থিক পরিসংখ্যান গোপন রাখা হয়। পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ মূলত ট্রাম্প পরিবারের মধ্যেই রাখা হয়।