Sarod
Sarod

এই শহরগুলিতে বেড়াতে গেলে সাবধান, এদিক থেকে ওদিকে হলেই পকেট থেকে খসবে লাখখানেক, জানুন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে

img

গত কয়েক বছরে বহু শহরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র কঠোর নিয়মাবলি চালু হয়েছে। যার মূল উদ্দেশ্য ওই পর্যটনস্থল এবং আশেপাশের পরিবেশকে রক্ষা করা। পাশাপাশি, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানও সংরক্ষণ করা।

img

ইউরোপের বিভিন্ন শহরে এরকম কিছু কড়া বিধিনিষেধ রয়েছে। যেখানকার কর্তৃপক্ষদের বক্তব্য, সমৃদ্ধ স্মৃতিসৌধের মধ্যে ভিড় তৈরি করা বা সাংস্কৃতিক রীতিনীতির প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা একেবারেই নিষিদ্ধ। দেখে নেওয়া বিখ্যাত কিছু শহরের নিষেধাজ্ঞার তালিকা।

img

ভেনিসে বাড়ির বাইরে অর্থাৎ রাস্তায় বসে খাওয়া বা পান করা নিষেধ। সিঁড়ি, স্মৃতিসৌধ, সেতু, উঁচু পথের উপর বসা বা শোয়া নিয়েও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এবং এর উলঙ্ঘনে ১০০-২০০ ইউরো (প্রায় ১০-২০ হাজার টাকা) জরিমানা হতে পারে। জলে সাঁতার কাটা, ডাইভিং করা বা স্নান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে রাস্তার মাঝে আবর্জনা ফেলাও নিষিদ্ধ। যার জরিমানা ৩৫০ ইউরো (প্রায় ৩৬,০০০ টাকা) ধার্য করা হয়েছে। অনুমোদিত এলাকা ছাড়া নগ্ন বা সাঁতারের পোশাকে চলাফেরা করলে ২৫০ ইউরো (প্রায় ২৫,৮০০ টাকা) জরিমানা করা হতে পারে।

img

রোম আরও একটি জনপ্রিয় ইতালিয়ান পর্যটনকেন্দ্র, যেখানে পর্যটকদের জন্য নানা নিয়ম ও বিধিনিষেধ রয়েছে। এই নিয়মাবলি না মানলে কঠোর জরিমানা করা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বিখ্যাত স্প্যানিশ স্টেপসে বসলে ৪০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ৪১,০০০ টাকা) হতে পারে। এছাড়াও, রোমের প্রধান প্রধান নিদর্শনের আশেপাশে খাওয়া বা পান করা নিষিদ্ধ। প্রসিদ্ধ ট্রেভি ফাউন্টেনে ঝাঁপ দিলে ৫০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ৫১,০০০ টাকা) হতে পারে, এবং লঙ্ঘনকারীদের সেই স্থানে পাকাপাকিভাবে প্রবেশ নিষিদ্ধও করা যেতে পারে।

img

উত্তর ইতালির চিনকুয়ে তেরে অঞ্চলের হাইকিং ট্রেইলগুলো তাদের মনোরম দৃশ্যের জন্য বেশ প্রসিদ্ধ। তবে, কিছু চ্যালেঞ্জিং ট্রেইলের জন্য সঠিক জুতো পরা অত্যাবশ্যক। নিরাপত্তার কারণে, ফ্লিপ-ফ্লপ, স্ট্র্যাপযুক্ত স্যান্ডাল, স্লাইডার এখানে পরিধান করা নিষিদ্ধ। নিয়ম না মানলে দর্শকদের ২,৫০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা) দিতে হতে পারে।

img

উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা করার জন্য গ্রীস সরকার সৈকত থেকে শাঁস বা ছোট পাথর সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ করেছে। এই নিয়ম ভাঙলে ১,০০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ১.০৩ লক্ষ টাকা) হতে পারে। পাশাপাশি, ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে হাই হিলস পরাও নিষিদ্ধ। এই ধরনের জুতো পরলে ৯০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ৯৩,০০০ টাকা) ধার্য করা হয়েছে।

img

পর্তুগালের জনপ্রিয় উপকূলীয় শহর আলবুফেইরায় সমুদ্রসৈকতের বাইরে সাঁতারের পোশাক পরলে ১,৫০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ১.৫৫ লক্ষ টাকা) হতে পারে। ইউরোপের অন্যান্য অনেক শহরেও একই ধরনের নিয়ম রয়েছে। পাশাপাশি, আংশিক বা সম্পূর্ণ নগ্ন থাকা, রাস্তায় মদ্যপান, পাবলিক এলাকায় রাত কাটানো বা রান্না করা, জনসমক্ষে প্রস্রাব বা পায়খানা করা, মাটিতে বসা, ক্যাম্পিং বা তাঁবু তৈরি করা, শপিং কার্ব পরিত্যাগ করা, অতিরিক্ত আওয়াজ করা ইত্যাদির ওপর তো বিধিনিষেধ রয়েছেই।

img

স্পেনের বার্সেলোনা এবং ক্যাসাব্লাঙ্কার মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে “সানবেড ট্যাক্স” চালু করা হয়েছে। সৈকতে দীর্ঘ সময় ধরে তোয়ালে বিছানো, নির্ধারিত সময়ের আগে সানবেড সংরক্ষণ করার মতো কাজ করলে ২৫০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ২৫ হাজার টাকা) ধার্য হতে পারে। এছাড়াও, স্পেনের বালিয়ারিক দ্বীপপুঞ্জের সরকার (যার মধ্যে মায়রকা ও ইবিজা অন্যতম) পাবলিক রাস্তায় মদ্যপান নিষিদ্ধ করেছে। এই নিয়ম ভাঙলে ৩,০০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা (প্রায় ৩.১ লক্ষ টাকা) করা হতে পারে।

img

ক্রোয়েশিয়ার ডাবরোভনিক শহরে পাবলিক এলাকায় ঘুমানো, মাতাল অবস্থায় আচরণ করা, স্মৃতিসৌধের ওপর ওঠা, জনসমক্ষে প্রস্রাব করা, সুরক্ষিত এলাকায় মদ্যপান করা ইত্যাদির জন্য জরিমানা ধার্য করা যেতে পারে। এছাড়াও, সমুদ্রসৈকত বা সুইমিং পুল নয় এমন এলাকায় সাঁতার পোশাক পরা বা শার্টবিহীন থাকা কিছু নির্দিষ্ট স্থানে জরিমানার কারণ হতে পারে।

img

ফ্রান্সে পর্যটকদের জানা উচিত যে শিশুদের প্যাসিভ ধূমপানের প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য অনেক পাবলিক আউটডোর স্পেসে (পার্ক, সৈকত, বাসস্টপ, সুইমিং পুল ইত্যাদি) ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও, কিছু উপকূলীয় পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের শার্টবিহীন বা সাঁতার পোশাক পরে ঘুরতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।