ভূত থেকে কালো বিড়াল, হ্যালোইনের সঙ্গে কি আদৌ এই সব বিষয়ের যোগ রয়েছে? ভুল ধারণা না রেখে জানুন আসল সত্যি
Soma Majumdar
বৃহস্পতিবার, 30 অক্টোবর 2025
1
7
অক্টোবর মানেই কুমড়ো, মুখোশ, ভয় আর মজা। ঠিক এভাবেই পৃথিবীর নানা দেশে পালিত হয় হ্যালোইন।খ্রিস্টানদের রীতি মাফিক প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর পালিত হয় এই উৎসব। প্রায় ২০০০ বছর আগে এই প্রথার সূচনা হয়েছিল।
2
7
মূলত পশ্চিমি দেশগুলিতে এই উৎসবের জন্ম হলেও বর্তমানে গোটা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এদিন নানা রকম পোশাকে সেজে ওঠে। সাজিয়ে তোলে নিজেদের ঘর বাড়িও। আর সবেতেই থাকে ভৌতিক ছোঁয়া। কিন্তু এই উৎসবকে ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে অনেক ভুল ধারণা ও কুসংস্কার। তেমনই কয়কটি বিষয়ে সত্যি জেনে নেওয়া যাক-
3
7
‘ট্রিক-অর-ট্রিট’ মিষ্টিতে বিষ বা সুই মেশানো হয়ঃ প্রতি বছরই খবর ওঠে, হ্যালোইনের রাতে শিশুদের মিষ্টিতে বিষ, ব্লেড বা সুই লুকিয়ে দেওয়া হয়। বাস্তবে এসব ঘটনা প্রায় বিরল। পুলিশ রেকর্ডে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি গুজব বা মন গড়া গল্প। আমেরিকায় ১৯৭০-এর দশকে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার পর থেকেই এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে আজও এই ধরনের বিপজ্জনক ঘটনা প্রমাণ সহ ধরা পড়েনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্ক নয়, শুধু সামান্য সতর্ক থাকলেই যথেষ্ট।
4
7
হ্যালোইন শয়তান পূজার উৎসবঃ অনেকেই মনে করেন, হ্যালোইন মানে খারাপ আত্মা, জাদু আর অন্ধকার শক্তির উৎসব। কিন্তু ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে। এটি মূলত প্রাচীন সেল্টিক উৎসব সামহেইন থেকে উদ্ভূত, যেখানে ফসল তোলার পর মৃত আত্মাদের স্মরণ করা হত। পরে খ্রিস্টধর্মের ‘অল হ্যালোস’ ইভ’-এর সঙ্গে মিশে বর্তমান হ্যালোইনের রূপ নেয়। অর্থাৎ এর সঙ্গে শয়তান পূজার কোনও সম্পর্কই নেই। আজকের মুখোশ, ভৌতিক সাজসজ্জা ও মজার রীতিগুলো কেবল বিনোদনের অংশ।
5
7
কালো বিড়াল মানেই দুর্ভাগ্যঃ হ্যালোইনের সময় কালো বিড়ালকে ঘিরে নানা কুসংস্কার মাথা চাড়া দেয়। মধ্যযুগে আত্মাদের সঙ্গী হিসেবে কালো বিড়ালের নাম যুক্ত করা হয়, আর সেখান থেকেই এই বিশ্বাস জন্ম নেয় যে তারা দুর্ভাগ্য বয়ে আনে। কিন্তু বাস্তবে, কালো বিড়ালও অন্য যে কোনও অন্য রঙের বিড়ালের মতোই আদুরে ও বুদ্ধিমান প্রাণী। প্রাণীকল্যাণ সংস্থাগুলোর মতে, এই কুসংস্কার অনেক কালো বিড়ালকে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
6
7
হ্যালোইনের রাতে অপরাধ বাড়েঃহ্যালোইন রাত মানেই বিশৃঙ্খলা বা অপরাধ বেড়ে যায়, এমন ধারণাও প্রচলিত। তবে পুলিশ ও সমাজ বিজ্ঞানীদের পরিসংখ্যান বলছে, বাস্তবে তেমন কোনও কিছু দেখা যায় না। বরং এই দিনে এলাকাবাসী একসঙ্গে উদযাপন করে। ফলে নজরদারি ও সামাজিক সচেতনতা অনেক বাড়ে। অবশ্য রাতে শিশুদের বেরনোর সময় প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে থাকা ও রাস্তা পারাপারে সতর্ক থাকা জরুরি।
7
7
হ্যালোইনের আসল উদ্দেশ্য ভয় ছড়ানো নয়, বরং একে অপরের সঙ্গে মজা করে উদযাপন করা। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, এই উৎসব মানুষকে মৃত্যুভয় ও অজানার ভয়কে হাস্যরসের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে শেখায়। তাই কুসংস্কার ভুলে নিরাপদে ও আনন্দে হ্যালোইন কাটানোই হোক মূল বার্তা।