জোরে চাপ দিয়ে প্রস্রাব করেন? সর্বনাশ হয়ে যাবে! মূত্র ত্যাগের সময় চাপ দিলে কী হয় জানেন?
Akash Debnath
শনিবার, 05 জুলাই 2025
1
8
আজকাল ওয়েবডেস্ক: অফিস বেরনোর আগে বা মিটিংয়ের মাঝে তড়িঘড়ি শৌচাগারে ঢোকা, আর তারপর যত দ্রুত সম্ভব মূত্রত্যাগ করে বেরিয়ে আসা এই ছবিটা অনেকের কাছেই খুব পরিচিত। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সাধারণ অভ্যাসটিই ডেকে আনতে পারে মারাত্মক রোগ। জোরে চাপ দিয়ে প্রস্রাব করার অভ্যাস অজান্তেই একাধিক রোগ ডেকে আনে।
2
8
অনেকেই ভাবেন, জোরে চাপ দিলে মূত্রাশয় বা ব্লাডার পুরোপুরি খালি হয়ে যায় এবং এতে আরাম মেলে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ঠিক তার উল্টো কথা।
3
8
স্বাভাবিক অবস্থায়, মূত্রাশয়ের পেশি নিজে থেকেই সংকুচিত হয়ে প্রস্রাব নিঃসরণ করে। এতে বাইরের চাপের কোনও প্রয়োজনই নেই। কিন্তু যখনই জোর করে পেটে চাপ সৃষ্টি করা হয়, তখন শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা হয়।
4
8
পেলভিক ফ্লোরের পেশির ক্ষতি: আমাদের তলপেটের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যেমন মূত্রাশয়, জরায়ু (মহিলাদের ক্ষেত্রে) এবং মলাশয়কে সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সাহায্য করে পেলভিক ফ্লোরের পেশিগুলি। প্রস্রাবের সময় অতিরিক্ত চাপ দিলে এই পেশিগুলো ক্রমশ দুর্বল হয়ে যায়।
5
8
মূত্রাশয়ের ক্ষতি: মূত্রাশয় কিছুটা বেলুনের মতো স্থিতিস্থাপক অঙ্গ। অতিরিক্ত চাপের ফলে এর স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়। অতিরিক্ত চাপে ব্লাডারের দেয়াল পুরু ও শক্ত হয়ে যেতে পারে। ফলে মূত্রাশয় সম্পূর্ণ খালি হতে পারে না। এর অনিবার্য পরিণতি হল, মূত্রাশয়ের ভেতরে সব সময় কিছু পরিমাণ প্রস্রাব থেকে যাওয়া। জমে থাকা এই প্রস্রাবই পরবর্তীকালে ব্যাকটেরিয়ার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয় এবং বারবার মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউটিআই-এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
6
8
হার্নিয়া এবং অর্শ (পাইলস): জোরে চাপ দেওয়ার ফলে তলপেটে হার্নিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ে। একইসঙ্গে, অতিরিক্ত চাপ মলাশয়ের রক্তনালীগুলির উপরও প্রভাব ফেলে, যা অর্শ বা পাইলসের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
7
8
তাহলে উপায় কী? ইউরোলজিস্ট বা মূত্ররোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ একেবারেই স্পষ্ট। ধৈর্য ধরুন। শৌচাগারে তাড়াহুড়ো করবেন না। শরীরকে তার স্বাভাবিক ছন্দে কাজ করতে দিন। আরাম করে বসে বা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করুন, মূত্রাশয়ের পেশি নিজে থেকেই তার কাজ করবে।
8
8
যদি দেখেন যে চাপ না দিলে আপনার প্রস্রাব হতেই চায় না বা খুব সরু ধারায় হয়, তবে তা অবহেলা করবেন না। এটি প্রোস্টেটের সমস্যা (পুরুষদের ক্ষেত্রে), মূত্রনালির সংক্রমণ বা অন্য কোনও রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। এই ধরনের সমস্যায় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।