Air India Flight Crash Ahmedabad this same Boeing 787 model also crashed before Air India Flight Crash Ahmedabad this same Boeing 787 model also crashed before

আগেও একের পর এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, সেই অভিশপ্ত বোয়িং বিমানই কেড়ে নিল দুই শতাধিক প্রাণ

img

আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়ল লন্ডনগামী এয়ারইন্ডিয়ার বিমান। ক্রু এবং যাত্রী মিলিয়ে ২৪২ জনের সকলেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করছে প্রশাসন। আমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থেকে ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটে বিপর্যয়। বোয়িং ৭৮৭ বিমানটি মেঘানিনগরের একটি বাড়ির উপর ভেঙে পড়ে।

img

মোট ৩০০ জন যাত্রী নিয়ে উড়তে পারে এই বিমান। লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল বিমানটির। প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি ছিল বিমানে। তার ফলে ভেঙে পড়ার পর ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয় বলে খবর।

img

তবে এই প্রথম নয় এর আগেও বোয়িং সংস্থার বিমান বহুবার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় পড়েছে। টেনেরিফ বিমানবন্দর বিপর্যয় (১৯৭৭) মৃতের সংখ্যা: ৫৮৩ বিমান: দুটি বোয়িং ৭৪৭। এটি শুধু বোয়িং নয়, বিমান পরিবহণের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ১৯৭৭ সালের ২৭ মার্চ স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের টেনেরিফ বিমানবন্দরে দু’টি বোয়িং ৭৪৭ জাম্বো জেটের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘন কুয়াশা এবং যোগাযোগের ত্রুটির কারণে এই বিপর্যয় ঘটে।

img

জাপান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ১২৩ (১৯৮৫) মৃতের সংখ্যা: ৫২০ বিমান: বোয়িং ৭৪৭এসআর। এটি একক বিমানের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা। ১৯৮৫ সালের ১২ আগস্ট জাপান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১২৩ টোকিও থেকে ওসাকা যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিমানটিতে ৫২৪ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য ছিলেন। উড্ডয়নের মাত্র ১২ মিনিট পর একটি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের শব্দ হয়। বিমানের পেছনের প্রেসার বাল্কহেড (চাপ নিয়ন্ত্রক অংশ) ফেটে যাওয়ায় বিমানের লেজের একটি বড় অংশ উড়ে যায়, যার ফলে বিমানের হাইড্রোলিক সিস্টেম পুরোপুরি বিকল হয়ে পড়ে।

img

পাইলটরা ৩২ মিনিট ধরে কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন বিমানটিকে আকাশে ভাসিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বিমানটি টোকিও থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে গুনমা প্রদেশের এক পার্বত্য অঞ্চলে আছড়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ৫২০ জনের মৃত্যু হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, চারজন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান। পরবর্তী তদন্তে জানা যায়, দুর্ঘটনার সাত বছর আগে বিমানটির লেজের একটি ভুল মেরামত করা হয়েছিল, যার কারণেই এই বিপর্যয় ঘটে।

img

চরখি দাদরি আকাশপথে সংঘর্ষ (১৯৯৬) মৃতের সংখ্যা: ৩৪৯ বিমান: বোয়িং ৭৪৭-১০০বি ও ইল্যুশিন আইএল-৭৬। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ আকাশপথে সংঘর্ষের ঘটনা। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ভারতের হরিয়ানার চরখি দাদরি গ্রামের আকাশে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৪৭ এবং কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের একটি ইল্যুশিন আইএল-৭৬ বিমানের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

img

সৌদি বিমানটি দিল্লি থেকে দাহরান যাচ্ছিল এবং কাজাখ বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। দিল্লির এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের নির্দেশ অমান্য করে কাজাখ বিমানটি নির্দিষ্ট উচ্চতার চেয়ে নিচে নেমে আসে, যার ফলে বিপরীত দিক থেকে আসা সৌদি বোয়িং ৭৪৭-এর সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় দু’টি বিমানের সকল যাত্রী ও ক্রু সদস্য, অর্থাৎ মোট ৩৪৯ জনেরই মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর ভারতের আকাশে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করা হয় এবং সব বাণিজ্যিক বিমানে ‘ট্র্যাফিক কলিশন অ্যাভয়েডেন্স সিস্টেম’ (TCAS) বাধ্যতামূলক করা হয়।

img

এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ফ্লাইট ৮১২ (২০১০) মৃতের সংখ্যা: ১৫৮ বিমান: বোয়িং ৭৩৭-৮০০। ভারতের মাটিতে ঘটা সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ২০১০ সালের ২২ মে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। বিমানটি ম্যাঙ্গালোরের ‘টেবিলটপ’ রানওয়েতে অবতরণের সময় পাইলট দেরিতে টাচডাউন করেন।

img

রানওয়ের শেষ প্রান্তে গিয়েও বিমানটি থামাতে না পারায় এটি প্রায় ৩০০ ফুট গভীর একটি খাদে পড়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। বিমানটিতে ১৬০ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়। মাত্র ৮ জন যাত্রী প্রাণে বাঁচেন। পাইলটের ভুল সিদ্ধান্তকেই এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়।

img

ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৭৫২ (২০২০) মৃতের সংখ্যা: ১৭৬ বিমান: বোয়িং ৭৩৭-৮০০। এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা যেখানে একটি যাত্রীবাহী বিমানকে সামরিক হামলায় ভূপাতিত করা হয়। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৭৫২ তেহরানের ইমাম খোমেইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই ভেঙে পড়ে।

img

বিমানটি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে যাচ্ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, সেই সময় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম সামরিক উত্তেজনা চলছিল। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস ভুলবশত বিমানটিকে শত্রু পক্ষের ক্রুজ মিসাইল হিসেবে শনাক্ত করে এবং দু’টি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে সেটিকে ভূপাতিত করে। বিমানটিতে থাকা ১৭৬ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্যের সকলেই এই ঘটনায় নিহত হন। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ইরান ও কানাডার নাগরিক। প্রথমে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলা হলেও পরে ইরান সরকার এই হামলার দায় স্বীকার করে নেয়।