গাড়ির মধ্যেই ‘অপারেশন থিয়েটার’! লিঙ্গবৃদ্ধির নামে ইন্টারনেট দেখে এ কী করতেন হাতুড়ে ডাক্তার? চোখ কপালে পুলিশের

img

আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়স ৫১, নিজেকে ডাক্তার বলে দাবি। কিন্তু ডাক্তারি বিদ্যার কোনও ডিগ্রি বা প্রথাগত শিক্ষা নেই। ভরসা কেবল টিকটক! সেই সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও দেখেই কি না চলন্ত গাড়ির মধ্যে অবলীলায় সেরে ফেলছিলেন পুরুষাঙ্গ বড় করার মতো ‘অস্ত্রোপচার’। খদ্দেরদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগে শেষমেশ পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন হাতুড়ে চিকিৎসক। ঘটনা ঘটেছে ব্যাংককে।

img

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম পিত্তিয়া মুলিন (৫১)। তিনি ‘চ্যাং ইয়াই মডিফাই’ ছদ্মনামেও পরিচিত। ব্যাঙ্কক এবং আশপাশের প্রদেশগুলিতে পুরুষাঙ্গ বড় করার ‘পরিষেবা’ দিতেন তিনি। কিন্তু এই পরিষেবার জন্য খদ্দেরদের ডাকা হত ১৯৯০ সালের একটি পুরনো টয়োটা করোলা গাড়ির ভিতরে। সেখানেই চলত ‘অস্ত্রোপচার’।

img

এই অদ্ভুত ব্যবস্থা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান বেশ কয়েক জন ‘রোগী’। তাঁদের কাছ থেকে একাধিক অভিযোগ পেয়েই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যক্তির কোনও মেডিক্যাল লাইসেন্স নেই। তিনি টিকটকে লিঙ্গ বৃদ্ধি এবং ইমপ্লান্টের বিজ্ঞাপন দিতেন। ‘সুবিধার জন্য’ হাসপাতালের বদলে গাড়ির ভেতরে অস্ত্রোপচার করা হত বলে দাবি করতেন তিনি।

img

গত ১৮ অক্টোবর সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (সিআইবি) এবং উপভোক্তা সুরক্ষা পুলিশ বিভাগ (সিপিপিডি) ওই ভুয়ো সার্জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। সেই সময় সে রাস্তার ধারে পার্ক করা তাঁর ওই ভ্রাম্যমাণ ‘অপারেশন থিয়েটার’-এ এক ব্যক্তির পুরুষাঙ্গে ‘বিড’ (পুঁতি) প্রতিস্থাপন করছিলেন তিনি।

img

আধিকারিকরা গাড়িটি থেকে ১৮৯টি বিভিন্ন ধরনের পুঁতি, অবশ করার ওষুধ, সার্জিক্যাল ব্লেড, অস্ত্রোপচারের সূঁচ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছেন। তদন্তকারীদের দাবি, এই সমস্ত সরঞ্জাম অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ব্যবহার করা হত। জেরার মুখে পিত্তিয়া স্বীকার করেছে, তাঁর কোনও ডাক্তারি পড়াশোনা নেই। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও দেখেই এই সব কাজ শিখেছেন তিনি। তিনি আরও জানান, “আমি বরাবরই এই ধরনের কাজে আগ্রহী। তাই এটা শিখে নিই এবং বাড়তি আয়ের জন্য একে পেশা হিসাবে গ্রহণ করি। প্রায় এক বছর ধরে আমি এই কাজ করছি।”

img

পুলিশ জানিয়েছে, পুঁতি বসানোর জন্য তিনি ১,০০০ ভাট (প্রায় ৩০ ডলার) এবং লিঙ্গ বৃদ্ধির ইঞ্জেকশনের জন্য ১০,০০০ ভাট (প্রায় ৩০০ ডলার) নিতেন। এই ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের ভিতরে ফিলার ঢুকিয়ে সেটিকে আরও স্থূল দেখানোর চেষ্টা করা হত। পুলিশ আরও জানিয়েছে, পিত্তিয়ার বিরুদ্ধে “রেজিস্ট্রেশন এবং অনুমতি ছাড়া ডাক্তারি” করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগে তাঁর তিন বছর পর্যন্ত জেল এবং ৩০,০০০ ভাট (প্রায় ১,০০০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

img

উপভোক্তা সুরক্ষা পুলিশ বিভাগের কমান্ডার, পুলিশ মেজর জেনারেল কংক্রিট লেরটিটিকুন বলেন, “পুঁতি প্রতিস্থাপন বা লিঙ্গ বৃদ্ধির ইঞ্জেকশনে প্রদাহ বা সংক্রমণের গুরুতর ঝুঁকি থাকে, যা পুরুষাঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। আমরা জড়িতদের অবিলম্বে এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য সতর্ক করতে চাই। পুলিশ আরও নজরদারি চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করবে।”

img

উল্লেখ্য, গত বছরও প্রায় একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল ব্যাংককে। সে বার এমন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি কোনও যোগ্যতা ছাড়াই ২০ বছর ধরে লিঙ্গ বৃদ্ধির অস্ত্রোপচার করছিলেন। ব্যাঙ্ককের বাসিন্দা কিটিকর্ন সোংস্রি শত শত ‘রোগীর’ উপর ইমপ্লান্ট সার্জারি এবং ফিলার ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এর জন্য তিনি ৪৫০ পাউন্ড পর্যন্ত পারিশ্রমিক নিতেন। ৩৬ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি স্বীকার করেছিলেন যে, হাই স্কুলের পড়া শেষ করেই ১৪ বছর বয়স থেকে নিজে নিজে ইমপ্লান্টের কাজ শিখতে শুরু করেন তিনি। এক খদ্দের সিলিকন ইঞ্জেকশন নেওয়ার পর ‘গুরুতর সংক্রমণের’ শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ জানানোর পরই পুলিশ তার কুকীর্তির কথা জানতে পারে।

img

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের প্রক্রিয়াগুলির জন্য বিশেষ ক্লিনিক রয়েছে। পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধির জন্য একাধিক বিকল্প রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল সিলিকন ইঞ্জেকশন, যা স্তন ইমপ্লান্টের মতোই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গে প্রবেশ করানো হয়। অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে কুঁচকির অভ্যন্তরীণ লিগামেন্ট কেটে পুরুষাঙ্গকে লম্বা করা কিংবা ফিলার জাতীয় পদার্থ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়ে পুরুষাঙ্গকে স্থূল করা।