পাকিস্তান–সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে সতর্ক ভারত, কেন এই চুক্তি করল পাকিস্তান

img

পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে সদ্য স্বাক্ষরিত কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি ঘিরে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে। দুই দেশ ঘোষণা করেছে যেকোনও এক পক্ষের বিরুদ্ধে আগ্রাসন মানেই উভয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলে গণ্য হবে এবং তারা যৌথভাবে জবাব দেবে।

img

এই ঘটনায় ভারত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, সরকার পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজর রাখছে এবং দেশের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা এই চুক্তির জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্বের শান্তির ওপর প্রভাব খতিয়ে দেখব। ভারত সরকারের অঙ্গীকার হল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা এবং সবক্ষেত্রে সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”

img

চুক্তিটি বুধবার সৌদি আরব সফরকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সৌদি নেতৃত্বের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। এর ঠিক আগে কাতারের দোহায় ৪০টি ইসলামি দেশের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে ইজরায়েলের হামাস নেতাদের ওপর কাতারে চালানো হামলার প্রেক্ষিতে ন্যাটো-সদৃশ জোট গঠনের ডাক ওঠে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানই একমাত্র ইসলামি দেশ যার কাছে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে।

img

সৌদি প্রেস এজেন্সি প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই চুক্তির লক্ষ্য হল দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও গভীর করা এবং যে কোনও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করা।” এই সমঝোতার মাধ্যমে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার কার্যত সৌদি আরবের জন্যও উন্মুক্ত হল।

img

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ধরনের চুক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে দিল্লি আগে থেকেই অবগত ছিল। মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেন, “আমরা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে এই পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে প্রতিবেদন দেখেছি। সরকার জানত যে এটি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনাধীন ছিল এবং এখন তা আনুষ্ঠানিক রূপ পেল।”

img

এই দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তি এমন সময়ে এল, যখন সাম্প্রতিক পাহালগাম জঙ্গি হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান–সৌদি চুক্তি শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতেও নতুন চাপ তৈরি করবে।

img

ভারতীয় কূটনৈতিক মহল মনে করছে নয়া দিল্লিকে এখন কৌশলগত দিক থেকে আরও সতর্ক থাকতে হবে, কারণ সৌদি আরবের মতো আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে পাকিস্তানের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ভারতের নিরাপত্তা নীতিকে প্রভাবিত করতে পারে।

img

এমনিতেই বিশ্বের দরবারে নানাভাবে চাপে রয়েছে পাকিস্তান। সেখানে এবার কাকে সে নিজের পাশে নেবে তা নিয়ে বহুদিন ধরেই চেষ্টা ছিল। এবার সৌদিকে পাশে নিয়ে পাকিস্তান কোন খেলা দেখায় সেটাই দেখার।