১২ কেজির বিশাল স্তন! ফিট হয় না কোনও জামা! কেন এমন হল? তরুণীর কষ্ট শুনলে চোখে জল আসবে

img

মাত্র ২২ বছর বয়সেই এক অবর্ণনীয় অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন ব্রাজিলের তরুণী থায়নারা মারকন্দেস। স্তনের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তাঁর জীবনকে করে তুলেছিল দুর্বিষহ। অবশেষে একটি দীর্ঘ, জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মুক্তি পেলেন তিনি।

img

থায়নারা একজন শিক্ষার্থী। এক সময় তিনি মিডিয়াম সাইজের জামা পরতেন স্বচ্ছন্দ্যে। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর স্তনের আকৃতি বেড়ে চলতে থাকে অবিশ্বাস্য হারে। প্রতি মাসে গড়ে ৭৫০ গ্রাম হারে বাড়তে থাকে স্তনের ওজন। এক সময় ওজন গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১২ কেজিতে।

img

কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারেন, সাধারণ দোকানে পাওয়া কোনও জামা তাঁর শরীরে মানাচ্ছে না। প্লাস সাইজ পোশাকেও কুলাচ্ছে না, বাধ্য হয়ে তৈরি করাতে হচ্ছে বিশেষ জামা।

img

এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রভাব পড়ে তাঁর দৈনন্দিন জীবনেও। কোমর, ঘাড় আর পিঠে অসহনীয় ব্যথা শুরু হয়। সামাজিক মাধ্যমেও তিনি জানান, “জুতো পরা, পায়ের নখ কাটার মতো ছোট ছোট কাজও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জিমে যাওয়া বন্ধ করতে হয়।” শেষ পর্যন্ত তাঁকে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতে হয়েছে।

img

এর পরেই চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন তিনি। প্রথমে চিকিৎসকরা স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা করলেও পরে তাঁর দেহে ধরা পড়ে এক বিরল রোগ। নাম জাইগান্টোমাস্টিয়া। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানাচ্ছে, এই রোগে অনিয়ন্ত্রিতভাবে স্তনের বৃদ্ধি হয়। রোগটি এতটাই বিরল যে বিশ্বজুড়ে মাত্র ৩০০টি কেস নথিভুক্ত হয়েছে।

img

চিকিৎসকরা জানান, এই অবস্থার নেপথ্যে একাধিক কারণ থাকতে পারে। যেমন হরমোনের অসামঞ্জস্য, গর্ভাবস্থা, স্থূলতা, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কিন্তু এক্ষেত্রে অটোইমিউন রোগ ছিল এই সমস্যার কারণ। কারও কারও ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি ধীরে ধীরে হলেও, থায়নারার ক্ষেত্রে মাত্র কয়েক সপ্তাহেই রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটে।

img

শারীরিক যন্ত্রণা ছাড়াও মানসিক চাপ, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও শরীর নিয়ে হীনম্মন্যতা দেখা দিতে পারে রোগীদের মধ্যে। পাশাপাশি স্তনের নিচে ঘা, ইনফেকশন, স্তনবৃন্তে অসাড়তা প্রভৃতি সমস্যাও দেখা দেয়।

img

শেষমেশ গত বছরের ২৫ অক্টোবর থায়নারার অস্ত্রোপচার হয়। ১০ ঘণ্টার এই জটিল অস্ত্রোপচারে খরচ হয় ৭,২০০ মার্কিন ডলার। বাদ দেওয়া হয় প্রায় ১০ কেজি টিস্যু। একদিন পরেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। বর্তমানে তিনি সুস্থ।

img

তবে এই রোগমুক্তির জন্য তাঁকে শারীরিক ভাবেও মূল্য চোকাতে হয়েছে। অস্ত্রোপচারের ফলে তিনি স্তনবৃন্তের অনুভুতি হারিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে তিনি সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যতে আবারও ফিরে আসতে পারে সমস্যা।